শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে।
যে শাখায় ফুল ফোটে না, ফল ধরে না একেবারে,
তোমার ওই বাদল-বায়ে দিক জাগায়ে সেই শাখারে।
যা-কিছু জীর্ণ আমার, দীর্ণ আমার, জীবনহারা,
তাহারি স্তরে স্তরে পড়ুক ঝরে সুরের ধারা।
নিশিদিন এই জীবনের তৃষার ’পরে, ভুখের ’পরে
শ্রবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে।
৯৯
বাজাও আমারে বাজাও
বাজালে যে সুরে প্রভাত-আলোরে সেই সুরে মোরে বাজাও।
যে সুর ভরিলে ভাষাভোলা গীতে শিশুর নবীন জীবনবাঁশিতে
জননী-মুখ-তাকানো হাসিতে— সেই সুরে মোরে বাজাও।
সাজাও আমারে সাজাও।
যে সাজে সাজালে ধরার ধূলিরে সেই সাজে মোরে সাজাও।
সন্ধ্যামালতী সাজে যে ছন্দে শুধু আপনারই গোপন গন্ধে,
যে সাজ নিজেরে ভোলে আনন্দে— সেই সাজে মোরে সাজাও।
১০০
তুমি যত ভার দিয়েছ সে ভার করিয়া দিয়েছ সোজা।
আমি যত ভার জমিয়ে তুলেছি সকলই হয়েছে বোঝা।
এ বোঝা আমার নামাও বন্ধু, নামাও—
ভারের বেগেতে চলেছি কোথায়, এ যাত্রা তুমি থামাও।
আপনি যে দুখ ডেকে আনি সে-যে জ্বালায় বজ্রানলে—
অঙ্গার ক’রে রেখে যায়, সেথা কোনো ফল নাহি ফলে।
তুমি যাহা দাও সে-যে দুঃখের দান
শ্রাবণধারায় বেদনার রসে সার্থক করে প্রাণ।
যেখানে যা-কিছু পেয়েছি কেবলই সকলই করেছি জমা—