পাতা:গীতবিতান.djvu/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
পূজা

যখন হারাই বন্ধ ঘরের তালা—
যখন অন্ধ নয়ন, শ্রবণ কালা,
তখন অন্ধকারে লুকিয়ে দ্বারে
শিকলে দাও নাড়া।
যত দুঃখ আমার দুঃস্বপনে,
সে যে ঘুমের ঘোরেই আসে মনে—
ঠেলা দিয়ে মায়ার আবেশ
কর গো দেশছাড়া।
আমি আপন মনের মারেই মরি,
শেষে দশ জনারে দোষী করি—
আমি চোখ বুজে পথ পাই নে ব’লে
কেঁদে ভাসাই পাড়া।

১৫১

এখনো গেল না আঁধার, এখনো রহিল বাধা।
এখনো মরণব্রত জীবনে হল না সাধা।
কবে যে দুঃখজ্বালা হবে রে বিজয়মালা,
ঝলিবে অরুণরাগে নিশীথরাতের কাঁদা।
এখনো নিজেরই ছায়া রচিছে কত যে মায়া।
এখনো কেন-যে মিছে চাহিছে কেবলই পিছে,
চকিতে বিজলি-আলো চোখেতে লাগালো ধাঁদা।

১৫২

লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তারে দিবি রে ঠাঁই?
দেখ্ রে চেয়ে আপন-পানে, পদ্মটি নাই, পদ্মটি নাই।
ফিরছে কেঁদে প্রভাতবাতাস, আলোক যে তার ম্লান হতাশ,
মুখে চেয়ে আকাশ তোরে শুধায় আজি নীরবে তাই।
কত গোপন আশা নিয়ে কোন্ সে গহন রাত্রিশেষে
অগাধ জলের তলা হতে অমল কুঁড়ি উঠল ভেসে।