কেন রে তোর দু হাত পাতা— দান তো না চাই, চাই যে দাতা—
সহজে তুই দিবি যখন সহজে তুই সকল লবি।
সহজ হবি, সহজ হবি, ওরে মন, সহজ হবি—
আপন বচন-রচন হতে বাহির হয়ে আয় রে কবি।
সকল কথার বাহিরেতে ভুবন আছে হৃদয় পেতে,
নীরব ফুলের নয়ন-পানে চেয়ে আছে প্রভাত-রবি।
১৯০
এই কথাটা ধরে রাখিস— মুক্তি তোরে পেতেই হবে।
যে পথ গেছে পারের পানে সে পথে তোর যেতেই হবে।
অভয় মনে কণ্ঠ ছাড়ি গান গেয়ে তুই দিবি পাড়ি,
খুশি হয়ে ঝড়ের হাওয়ায় ঢেউ যে তোরে খেতেই হবে।
পাকের ঘোরে ঘোরায় যদি, ছুটি তোরে পেতেই হবে।
চলার পথে কাঁটা থাকে, দ’লে তোমায় যেতেই হবে।
সুখের আশা আঁকড়ে লয়ে মরিস নে তুই ভয়ে ভয়ে,
জীবনকে তোর ভ’রে নিতে মরণ-আঘাত খেতেই হবে।
১৯১
সেই তো আমি চাই—
সাধনা যে শেষ হবে মোর সে ভাবনা তো নাই।
ফলের তরে নয় তো খোঁজা, কে রইবে সে বিষম বোঝা—
যেই ফলে ফল ধুলায় ফেলে আবার ফুল ফুটাই।
এমনি ক’রে মোর জীবনে অসীম ব্যাকুলতা,
নিত্য নূতন সাধনাতে নিত্যনূতন ব্যথা!
পেলেই সে তো ফুরিয়ে ফেলি, আবার আমি দু হাত মেলি—
নিত্য দেওয়া ফুরায় না যে, নিত্য নেওয়া তাই।