যে রাগ জাগাও আমার প্রাণে বাজে নি তা চরম তানে,
নিঠুর মূর্ছনায় সে গানে মূর্তি সঞ্চারো॥
লাগে না গো কেবল যেন কোমল করুণা,
মৃদু সুরের খেলায় এ প্রাণ ব্যর্থ কোরো না।
জ্ব’লে উঠুক সকল হতাশ, গর্জি উঠুক সকল বাতাস,
জাগিয়ে দিয়ে সকল আকাশ পূর্ণতা বিস্তারো॥
২২৫
আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই, বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে।
এ কৃপা কঠোর সঞ্চিত মোর জীবন ভ’রে॥
না চাহিতে মোরে যা করেছ দান— আকাশ আলোক তনু মন প্রাণ,
দিনে দিনে তুমি নিতেছ আমায় সে মহা দানেরই যোগ্য ক’রে
অতি-ইচ্ছার সঙ্কট হতে বাঁচায়ে মোরে॥
আমি কখনো বা ভুলি কখনো বা চলি তোমার পথের লক্ষ্য ধরে;
তুমি নিষ্ঠুর সন্মুখ হতে যাও যে সরে।
এ যে তব দয়া, জানি জানি হায়, নিতে চাও ব’লে ফিরাও আমায়—
পূর্ণ করিয়া লবে এ জীবন তব মিলনেরই যোগ্য ক’রে
আধা-ইচ্ছার সঙ্কট হতে বাঁচায়ে মোরে॥
২২৬
প্রচণ্ড গর্জনে আসিল একি দুর্দিন—
দারুণ ঘনঘটা, অবিরল অশনিতর্জন।
ঘন ঘন দামিনী-ভুজঙ্গ-ক্ষত যামিনী,
অম্বর করিছে অন্ধনয়নে অশ্র-বরিষন॥
ছাড়ো রে শঙ্কা, জাগো ভীরু অলস,
আনন্দে জাগাও অন্তরে শকতি।
অকুণ্ঠ আঁখি মেলি হেরো প্রশান্ত বিরাজিত
মহাভয়-মহাসনে অপরূপ মৃত্যুঞ্জয়রূপে ভয়হরণ॥