পাতা:গীতবিতান.djvu/২২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পূজা
১১৩

২৬০

তুই কেবল থাকিস সরে সরে,
তাই পাস নে কিছুই হৃদয় ভরে॥
আনন্দভাণ্ডারের থেকে দূত যে তোরে গেল ডেকে—
কোণে বসে দিস নে সাড়া, সব খোওয়ালি এমনি করে॥
জীবনটাকে তোল্ জাগিয়ে,
মাঝে সবার আয় আগিয়ে।
চলিস নে পথ মেপে মেপে আপনাকে দে নিখিল ব্যেপে—
যে ক’টা দিন বাকি আছে কাটাস নে আর ঘুমের ঘোরে॥

২৬১

দাঁড়াও, মন, অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড-মাঝে আনন্দসভাভবনে আজ॥
বিপুলমহিমাময়, গগনে মহাসনে বিরাজ করে বিশ্বরাজ॥
সিন্ধু শৈল তটিনী মহারণ্য জলধরমালা
তপন চন্দ্র তারা গভীর মন্দ্রে গাহিছে শুন গান।
এই বিশ্বমহোৎসব দেখি মগন হল সুখে কবিচিত্ত,
ভুলি গেল সব কাজ॥

২৬২

নদীপারের এই আষাঢ়ের প্রভাতখানি
নে রে ও মন, নে রে আপন প্রাণে টানি॥
সবুজ-নীলে সোনায় মিলে যে সুধা এই ছড়িয়ে দিলে,
জাগিয়ে দিলে আকাশতলে গভীর বাণী,
নে রে ও মন, নে রে আপন প্রাণে টানি॥
এমনি করে চলতে পথে ভবের কুলে
দুই ধারে যা ফুল ফুটে সব নিস রে তুলে।
সে ফুলগুলি চেতনাতে গেঁথে তুলিস দিবস-রাতে,
দিনে দিনে আলোর মালা ভাগ্য মানি—
নে রে ও মন, নে রে আপন প্রাণে টানি॥