পাতা:গীতবিতান.djvu/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
পূজা

৩৩৫

যে ধ্রুবপদ দিয়েছ বাঁধি বিশ্বতানে
মিলাব তাই জীবনগানে।
গগনে তব বিমল নীল— হৃদয়ে লব তাহারি মিল,
শান্তিময়ী গভীর বাণী নীরব প্রাণে॥
বাজায় উষা নিশীথকূলে যে গীতভাষা
সে ধ্বনি নিয়ে জাগিবে মোর নবীন আশা।
ফুলের মতো সহজ সুরে প্রভাত মম উঠিবে পূরে,
সন্ধ্যা মম সে সুরে যেন মরিতে জানে॥

৩৩৬

ওরে, তোরা যারা শুনবি না
তোদের তরে আকাশ-’পরে নিত্য বাজে কোন্ বীণা॥
দূরের শঙ্খ উঠল বেজে, পথে বাহির হল সে যে,
দুয়ারে তোর আসবে কবে তার লাগি দিন গুনবি না?
রাতগুলো যায় হায় রে বৃথায়, দিনগুলো যায় ভেসে—
মনে আশা রাখবি না কি মিলন হবে শেষে?
হয়তো দিনের দেরি আছে, হয়তো সে দিন আস্‌ল কাছে—
মিলনরাতে ফুটবে যে ফুল তার কি রে বীজ বুনবি না?

৩৩৭

মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকাল-মাঝে
আমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে, ভ্রমি বিস্ময়ে॥
তুমি আছ, বিশ্বনাথ, অসীম রহস্যমাঝে
নীরবে একাকী আপন মহিমানিলয়ে॥
অনন্ত এ দেশকালে, অগণ্য এ দীপ্ত লোকে,
তুমি আছ মোরে চাহি— আমি চাহি তোমা-পানে।
স্তব্ধ সর্ব কোলাহল, শান্তিমগ্ন চরাচর—
এক তুমি, তোমা-মাঝে আমি একা নির্ভয়ে॥