পাতা:গীতবিতান.djvu/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
পূজা

ওগো, তোমার সোনার আলোর ধারা, তার ধারি ধার—
আমার কালো মাটির ফুল ফুটিয়ে শোধ করি তার।
আমার শরৎরাতের শেফালিবন সৌরভেতে মাতে যখন
তখন পালটা সে তান লাগে তব শ্রাবণ-রাতের প্রেম-বরিষায়॥

৩৪৭

অরূপবীণা রূপের আড়ালে লুকিয়ে বাজে,
সে বীণা আজি উঠিল বাজি হৃদয়মাঝে॥
ভুবন আমার ভরিল সুরে, ভেদ ঘুচে যায় নিকটে দুরে,
সেই রাগিণী লেগেছে আমার সকল কাজে॥
হাতে-পাওয়ার চোখে-চাওয়ার সকল বাঁধন
গেল কেটে আজ, সফল হল সকল কাঁদন।
সুরের রসে হারিয়ে যাওয়া সেই তো দেখা, সেই তো পাওয়া—
বিরহ মিলন মিলে গেল আজ সমান সাজে॥

৩৪৮

আমি জ্বালব না মোর বাতায়নে প্রদীপ আনি,
আমি শুনব বসে আঁধার-ভরা গভীর বাণী॥
তার আমার এ দেহ মন মিলায়ে যাক নিশীথরাতে,
আমার লুকিয়ে-ফোটা এই হৃদয়ের পুষ্পপাতে,
থাক্‌-না ঢাকা মোর বেদনার গন্ধখানি॥
আমার সকল হৃদয় উধাও হবে তারার মাঝে
যেখানে ওই আঁধারবীণায় আলো বাজে।
আমার সকল দিনের পথ খোঁজা এই হল সারা,
এখন দিক্-বিদিকের শেষে এসে দিশাহারা
কিসের আশায় বসে আছি অভয় মানি॥

৩৪৯

আমি যখন তাঁর দুয়ারে ভিক্ষা নিতে যাই তখন যাহা পাই
সে যে আমি হারাই বারে বারে॥