কী করিলে বলো পাইব তোমারে, রাখিব আঁখিতে আঁখিতে।
এত প্রেম আমি কোথা পাব নাথ, তোমারে হৃদয়ে রাখিতে?
আর কারো পানে চাহিব না আর, করিব হে আমি প্রাণপণ—
তুমি যদি বল এখনি করিব বিষয়বাসনা বিসর্জন॥
৩৯৫
তোমার কথা হেথা কেহ তো বলে না, করে শুধু মিছে কোলাহল।
সুধাসাগরের তীরেতে বসিয়া পান করে শুধু হলাহল॥
আপনি কেটেছে আপনার মূল—না জানে সাঁতার, নাহি পায় কূল,
স্রোতে যায় ভেসে, ডোবে বুঝি শেষে, করে দিবানিশি টলোমল॥
আমি কোথা যাব, কাহারে শুধাব, নিয়ে যায় সবে টানিয়া।
একেলা আমারে ফেলে যাবে শেষে অকূল পাথারে আনিয়া।
সুহৃদের তরে চাই চারি ধারে, আঁখি করিতেছে ছলোছল,
আপনার ভারে মরি যে আপনি কাঁপিছে হৃদয় হীনবল॥
৩৯৬
কেন বাণী তব নাহি শুনি নাথ হে?
অন্ধজনে নয়ন দিয়ে অন্ধকারে ফেলিলে, বিরহে তব কাটে দিনরাত হে॥
স্বপনসম মিলাবে যদি কেন গো দিলে চেতনা—
চকিতে শুধু দেখা দিয়ে চিরমরমবেদনা,
আপনা-পানে চাহি শুধু নয়নজলপাত হে॥
পরশে তব জীবন নব সহসা যদি জাগিল
কেন জীবন বিফল কর— মরণশরঘাত হে।
অহঙ্কার চূর্ণ করো, প্রেমে মন পূর্ণ করো,
হৃদয় মন হরণ করি রাখো তব সাথ হে॥
৩৯৭
তুমি ছেড়ে ছিলে, ভুলে ছিলে ব’লে হেরো গো কী দশা হয়েছে—
মলিন বদন, মলিন হৃদয়, শোকে প্রাণ ডুবে রয়েছে॥