পাতা:গীতবিতান.djvu/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূজা
২১১

৫৩৪

ওগো সুন্দর, একদা কী জানি কোন্ পুণ্যের ফলে
আমি বনফুল তোমার মালায় ছিলাম তোমার গলে।
তখন প্রভাতে প্রথম তরুণ আলো
ঘুম-ভাঙা চোখে ধরার লেগেছে ভালো,
বিভাসে ললিতে নবীনের বীণা বেজেছে জলে স্থলে॥
আজি এ ক্লান্ত দিবসের অবসানে
লুপ্ত আলোয়, পাখির সুপ্ত গানে,
শ্রান্তি-আবেশে যদি অবশেষে ঝরে ফুল ধরাতলে—
সন্ধ্যাবাতাসে অন্ধকারের পারে
পিছে পিছে তব উড়ায়ে চলুক তারে,
ধুলায় ধুলায় দীর্ণ জীর্ণ না হোক সে পলে পলে॥

৫৩৫

রুদ্রবেশে কেমন খেলা, কালো মেঘের ভ্রূকুটি!
সন্ধ্যাকাশের বক্ষ যে ওই বজ্রবাণে যায় টুটি॥
সুন্দর হে, তোমায় চেয়ে ফুল ছিল সব শাখা ছেয়ে,
ঝড়ের বেগে আঘাত লেগে ধুলায় তারা যায় লুটি॥
মিলনদিনে হঠাৎ কেন লুকাও তোমার মাধুরী!
ভীরুকে ভয় দেখাতে চাও, একি দারুণ চাতুরী!
যদি তোমার কঠিন ঘায়ে বাঁধন দিতে চাও ঘুচায়ে,
কঠোর বলে টেনে নিয়ে বক্ষে তোমার দাও ছুটি॥

৫৩৬

জাগে নাথ জোছনারাতে—
জাগো রে অন্তর, জাগো॥
তাঁহারি পানে চাহো মুগ্ধপ্রাণে
নিমেষহারা আঁখিপাতে॥