পাতা:গীতবিতান.djvu/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূজা
২১৫

৫৪৬

আমি কান পেতে রই ও আমার আপন হৃদয়গহন-দ্বারে বারে বারে
কোন্ গোপনবাসীর কান্নাহাসির গোপন কথা শুনিবারে— বারে বারে॥
ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি নিভৃত নীল পদ্ম লাগি রে,
কোন্ রাতের পাখি গায় একাকী সঙ্গীবিহীন অন্ধকারে বারে বারে॥
কে সে মোর কেই বা জানে, কিছু তার দেখি আভা।
কিছু পাই অনুমানে, কিছু তার বুঝি না বা।
মাঝে মাঝে তার বারতা আমার ভাষায় পায় কি কথা রে,
ও সে আমায় জানি পাঠায় বাণী গানের তানে লুকিয়ে তারে বারে বারে॥

৫৪৭

আমি তারেই খুঁজে বেড়াই যে রয় মনে আমার মনে।
সে আছে ব’লে
আমার আকাশ জুড়ে ফোটে তারা রাতে,
প্রাতে ফুল ফুটে রয় বনে আমার বনে॥
সে আছে ব’লে চোখের তারার আলোয়
এত রূপের খেলা রঙের মেলা অসীম সাদায় কালোয়।
সে মোর সঙ্গে থাকে ব’লে
আমার অঙ্গে অঙ্গে হরষ জাগায় দখিন-সমীরণে॥
তারি বাণী হঠাৎ উঠে পূরে
আন্‌মনা কোন্ তানের মাঝে আমার গানের সুরে।
দুখের দোলে হঠাৎ মোরে দোলায়,
কাজের মাঝে লুকিয়ে থেকে আমারে কাজ ভোলায়।
সে মোর চিরদিনের ব’লে
তারি পুলকে মোর পলকগুলি ভরে ক্ষণে ক্ষণে॥

৫৪৮

সে যে মনের মানুষ, কেন তারে বসিয়ে রাখিস নয়নদ্বারে?
ডাক্-না রে তোর বুকের ভিতর, নয়ন ভাসুক নয়নধারে॥