তোমার রঙিন তুলির পাকে নামাবলীর আঁকন আঁকে,
তাই নিয়ে তো ফুলের বনে হাওয়ায় হাওয়ায় মাতামাতি॥
এই কামনা রইল মনে— গোপনে আজ তোমায় কব
পড়বে আঁকা মোর জীবনে রেখায় রেখায় আখর তব।
দিনের শেষে আমায় যবে বিদায় নিয়ে যেতেই হবে
তোমার হাতের লিখনমালা
সুরের সুতোয় যাব গাঁথি॥
৬০৩
দিনের বেলায় বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে অনেক সুরে—
গানের পরশ প্রাণে এল, আপনি তুমি রইলে দূরে॥
শুধাই যত পথের লোকে ‘এই বাশিটি বাজালো কে’—
নানান নামে ভোলায় তারা, নানান দ্বারে বেড়াই ঘুরে॥
এখন আকাশ ম্লান হল, ক্লান্ত দিবা চক্ষু বোজে—
পথে পথে ফেরাও যদি মরব তবে মিথ্যা খোঁজে।
বাহির ছেড়ে ভিতরেতে আপনি লহো আসন পেতে—
তোমার বাঁশি,বাজাও আসি
আমার প্রাণের অন্তঃপুরে॥
৬০৪
মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ—
ভুবন জুড়ে রইল লেগে আনন্দ-আবেশ॥
দিনান্তের এই এক কোনাতে সন্ধ্যামেঘের শেষ সোনাতে
মন যে আমার গুঞ্জরিছে কোথায় নিরুদ্দেশ॥
সায়ন্তনের ক্লান্ত ফুলের গন্ধ হাওয়ার ’পরে
অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে সকল অঙ্গ ভরে।
এই গোধূলির ধূসরিমায় শ্যামল ধরার সীমায় সীমায়
শুনি বনে বনান্তরে অসীম গানের রেশ॥