তীর যে হোথা স্থির রয়েছে, ঘরের প্রদীপ সেই জ্বালালো—
অচল রহে তাহার আলো।
গানের প্রদীপ তুই যে গানে চলবি ছুটে অকূল-পানে
চপল ঢেউয়ের আকুল তালে॥
৯
কাল রাতের বেলা গান এল মাের মনে,
তখন তুমি ছিলে না মাের সনে॥
যে কথাটি বলব তােমায় ব’লে কাটল জীবন নীরব চোখের জলে
সেই কথাটি সুরের হােমানলে উঠল জ্বলে একটি আঁধার ক্ষণে—
তখন তুমি ছিলে না মাের সনে॥
ভেবেছিলেম আজকে সকাল হলে
সেই কথাটি তােমায় যাব বলে।
ফুলের উদাস সুবাস বেড়ায় ঘুরে পাখির গানে আকাশ গেল পূরে,
সেই কথাটি লাগল না সেই সুরে যতই প্রয়াস করি পরানপণে—
যখন তুমি আছ আমার সনে॥
১০
মনে রবে কি না রবে আমারে সে আমার মনে নাই।
ক্ষণে ক্ষণে আসি তব দুয়ারে, অকারণে গান গাই॥
চলে যায় দিন, যতখন আছি পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি
তােমার মুখের চকিত সুখের হাসি দেখিতে যে চাই—
তাই অকারণে গান গাই॥
ফাগুনের ফুল যায় ঝরিয়া ফাগুনের অবসানে—
ক্ষণিকের মুঠি দেয় ভরিয়া, আর কিছু নাহি জানে।
ফুরাইবে দিন, আলাে হবে ক্ষীণ, গান সারা হবে, থেমে যাবে বীন,
যতখন থাকি ভরে দিবে না কি এ খেলারই ভেলাটাই—
তাই অকারণে গান গাই॥