ডাক উঠেছে মেঘে মেঘে, অলস পাখা উঠল জেগে—
লাগল তারে উদাসী ওই নীল গগনের পরশখানি।
আমার নীড়ের পাখি এবার উধাও হল আকাশ-মাঝে।
যায় নি কারো সন্ধানে সে, যায় নি যে সে কোনো কাজে।
গানের ভরা উঠল ভরে, চায় দিতে তাই উজাড় করে—
নীরব গানের সাগর-মাঝে আপন প্রাণের সকল বাণী।
২৩
ছুটির বাঁশি বাজল যে ওই নীল গগনে,
আমি কেন একলা বসে এই বিজনে।
বাঁধন টুটে উঠবে ফুটে শিউলিগুলি,
তাই তো কুঁড়ি কানন জুড়ি উঠছে দুলি,
শিশির-ধোওয়া হাওয়ার ছোঁওয়া লাগল বনে—
সুর খুঁজে তাই শূন্যে তাকাই আপন-মনে।
বনের পথে কী মায়াজাল হয় যে বোনা,
সেইখানেতে আলোছায়ার চেনাশোনা।
ঝরে-পড়া মালতী তার গন্ধশ্বাসে
কান্না-আভাস দেয় মেলে ওই ঘাসে ঘাসে,
আকাশ হাসে শুভ্র কাশের আন্দোলনে—
সুর খুঁজে তাই শূন্যে তাকাই আপন-মনে।
২৪
বাঁশি আমি বাজাই নি কি পথের ধারে ধারে।
গান গাওয়া কি হয় নি সারা তোমার বাহির-দ্বারে।
ওই-যে দ্বারের যবনিকা নানা বর্ণে চিত্রে লিখা
নানা সুরের অর্ঘ্য হোথায় দিলেম বারে বারে।
আজ যেন কোন্ শেষের বাণী শুনি জলে স্থলে—
‘পথের বাঁধন ঘুচিয়ে ফেলো’ এই কথা সে বলে।
মিলন-ছোঁওয়া বিচ্ছেদেরই অন্তবিহীন ফেরাফেরি
কাটিয়ে দিয়ে যাও গো নিয়ে আনাগোনার পারে।