হাজার লোকের মাঝে রয়েছি একেলা যে—
এসো,আমার হঠাৎ-আলো, পরান চমকি তোলো।
আঁধার বাধা আমার ঘরে, জানি না কঁদি কাহার তরে।
চরণসেবার সাধনা আনো, সকল দেবার বেদনা আনো—
নবীন প্রাণের জাগরমন্ত্র কানে কানে বোলো।
৫২
আজি গোধূলিলগনে এই বাদলগগনে
তার চরণধ্বনি আমি হৃদয়ে গণি—
‘সে আসিবে’ আমার মন বলে সারাবেলা,
অকারণ পুলকে আঁখি ভাসে জলে।
অধীর পবনে তার উত্তরীয় দূরের পরশন দিল কি ও—
রজনীগন্ধার পরিমলে ‘সে আসিবে’ আমার মন বলে।
উতলা হয়েছে মালতীর লতা, ফুরালো না তাহার মনের কথা।
বনে বনে আজি একি কানাকানি,
কিসের বারতা ওরা পেয়েছে না জানি,
কাঁপন লাগে দিগঙ্গনার বুকের আঁচলে—
‘সে আসিবে’ আমার মন বলে।
৫৩
আমি চাহিতে এসেছি শুধু একখানি মালা
তব নব প্রভাতের নবীন-শিশির-ঢালা।
হেরো শরমে-জড়িত কত-না গোলাপ কত-না গরবি করবী,
ওগো, কতনা কুসুম ফুটেছে তোমার মালঞ্চ করি আলা।
ওগো, অমল শরত-শীতল-সমীর বহিছে তোমারি কেশে,
ওগো, কিশোর-অরুণ-কিরণ তোমার অধরে পড়েছে এসে।
তব অঞ্চল হতে বনপথে ফুল যেতেছে পড়িয়া ঝরিয়া—
ওগো, অনেক কুন্দ অনেক শেফালি ভরেছে তোমার ডালা।