কুঞ্জবনের ভ্রমর বুঝি বাঁশির মাঝে গুঞ্জরে,
বকুলগুলি আকুল হয়ে বাঁশির গানে মুঞ্জরে
যমুনারই কলতান কানে আসে, কাঁদে প্রাণ—
আকাশে ওই মধুর বিধু কাহার পানে হেসে চায়।
৫৭
বড় বেদনার মতো বেজেছ তুমি হে আমার প্রাণে,
মন যে কেমন করে মনে মনে তাহা মনই জানে।
তোমারে হৃদয়ে ক’রে আছি নিশিদিন ধ’রে,
চেয়ে থাকি আঁখি ভ’রে মুখের পানে।
বড় আশা, বড়ো তৃষা, বড়ো আকিঞ্চন তোমারি লাগি
বড় সুখে, বড়ো দুখে, বড়ো অনুরাগে রয়েছি জাগি।
এ জন্মের মতো আর হয়ে গেছে যা হবার,
ভেসে গেছে মন প্রাণ মরণ টানে।
৫৮
আমার মন মানে না— দিনরজনী।
আমি কী কথা স্মরিয়া এ তনু ভরিয়া পুলক রাখিতে নারি।
ওগো, কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি—
ওগো সজনি।
সে সুধাবচন, সে সুখপরশ, অঙ্গে বাজিছে বাঁশি।
তাই শুনিয়া শুনিয়া আপনার মনে হৃদয় হয় উদাসী—
কেন না জানি।
ওগো, বাতাসে কী কথা ভেসে চলে আসে, আকাশে কী মুখ জাগে
ওগো, বনমর্মরে নদীনির্ঝরে কী মধুর সুর লাগে।
ফুলের গন্ধ বন্ধুর মতো জড়ায়ে ধরিছে গলে—
আমি এ কথা, এ ব্যথা, সুখব্যাকুলতা কাহার চরণতলে
দিব নিছনি।