সখী, সে আসি ধুলায় বসে যে তরুর তলে
সেথা আসন বিছায়ে রাখিস বকুলদলে।
সে যে করুণা লাগায় সকরুণ নয়নে—
যেন কী বলিতে চায়, না বলিয়া যায় সে।
৬২
তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম
নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশথিনী-সম।
মম জীবন যৌবন মম অখিল ভুবন
তুমি ভরিবে গৌরবে নিশীথিনী-সম।
জাগিবে একাকী, তব করুণ আঁখি,
তব অঞ্চলছায়া মোরে রহিবে ঢাকি।
মম দুঃখবেদন মম সফল স্বপন
তুমি ভরিবে সৌরভে নিশীথিনী-সম।
৬৩
তোমার গোপন কথাটি, সখী, রেখো না মনে।
শুধু আমায়, বোলো আমায় গোপনে।
ওগো ধীরমধুরহাসিনী, বোলো ধীরমধুর ভাষে—
আমি কানে না শুনিব গো, শুনিব প্রাণের শ্রবণে।
যবে গভীর যামিনী, যবে নীরব মেদিনী,
যবে সুপ্তিমগন বিহগনীড় কুসুমকাননে,
বোলো অশ্রুজড়িত কণ্ঠে, বোলো কম্পিত স্মিত হাসে—
বোলো মধুরবেদনবিদুর হৃদয়ে শরমনমিত নয়নে।
৬৪
এসো আমার ঘরে।
বাহির হয়ে এসো তুমি যে আছ অন্তরে।
স্বপনদুয়ার খুলে এসো অরুণ-আলোকে
মুগ্ধ এ চোখে।