৮৪
আর নাই রে বেলা, নামল ছায়া ধরণীতে।
এখন চল্ রে ঘাটে কলসখানি ভরে নিতে।
জলধারায় কলস্বরে সন্ধ্যাগগন আকুল করে,
ওরে, ডাকে আমায় পথের ’পরে সেই ধ্বনিতে।
এখন বিজন পথে করে না কেউ আসা যাওয়া।
ওরে, প্রেমনদীতে উঠেছে ঢেউ, উতল হাওয়া।
জানি নে আর ফিরব কিনা, কার সাথে আজ হবে চিনা—
ঘাটে সেই অজানা বাজায় বীণা তরণীতে।
৮৫
বেদনায় ভরে গিয়েছে পেয়ালা, নিয়ো হে নিয়ো।
হৃদয় বিদারি হয়ে গেল ঢালা, পিয়ো হে পিয়ো।
ভরা সে পাত্র, তারে বুকে ক’রে বেড়ানু বহিয়া সারা রাতি ধরে,
লও তুলে লও আজি নিশিভোরে প্রিয় হে প্রিয়।
বাসনার রঙে লহরে লহরে রঙিন হল।
করুণ তোমার অরুণ অধরে তোলো হে তোলো।
এ রসে মিশাক তব নিশ্বাস নবীন উষার পুষ্পসুবাস—
এরই ’পরে তব আঁখির আভাস দিয়ো হে দিয়ো।
৮৬
আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী।
তুমি থাক সিন্ধুপারে ওগো বিদেশিনী।
তোমায় দেখেছি শারদপ্রাতে, তোমায় দেখেছি মাধবী রাতে,
তোমায় দেখেছি হৃদি-মাঝারে ওগো বিদেশিনী।
আমি আকাশে পাতিয়া কান শুনেছি শুনেছি তোমারি গান,
আমি তোমারে সঁপেছি প্রাণ ওগো বিদেশিনী।
ভুবন ভ্রমিয়া শেষে আমি এসেছি নূতন দেশে,
আমি অতিথি তোমারি দ্বারে ওগো বিদেশিনী।