১০৫
নূপুর বেজে যায় রিনিরিনি।
আমার মন কয়, চিনি চিনি॥
গন্ধ রেখে যায় মধুবায়ে মাধবীবিতানের ছায়ে ছায়ে,
ধরণী শিহরায় পায়ে পায়ে, কলসে কঙ্কণে কিনিকিনি॥
পারুল শুধাইল, কে তুমি গাে, অজানা কাননের মায়ামৃগ।
কামিনী ফুলকুল বরষিছে, পবন এলােচুল পরশিছে,
আঁধারে তারাগুলি হরষিছে, ঝিল্লি ঝনকিছে ঝিনিঝিনি॥
১০৬
আরাে একটু বসাে তুমি, আরাে একটু বলো।
পথিক, কেন অথির হেন— নয়ন ছলােছলাে॥
আমার কী যে শুনতে এলে তার কিছু কি আভাস পেলে—
নীরব কথা বুকে আমার করে টলােমলো॥
যখন থাক দূরে
আমার মনের গােপন বাণী বাজে গভীর সুরে।
কাছে এলে তােমার আঁখি সকল কথা দেয় যে ঢাকি—
সে যে মৌন প্রাণের রাতে তারা জ্বলােজ্বলো॥
১০৭
বর্ষণমন্দ্রিত অন্ধকারে এসেছি তােমারি এ দ্বারে,
পথিকেরে লহাে ডাকি তব মন্দিরের এক ধারে॥
বনপথ হতে, সুন্দরী, এনেছি মল্লিকামঞ্জরী—
তুমি লবে নিজ বেণীবন্ধে মনে রেখেছি এ দুরাশারে॥
কোনাে কথা নাহি ব’লে ধীরে ধীরে ফিরে যাব চলে।
ঝিল্লিঝঙ্কৃত নিশীথে পথে যেতে বাঁশরিতে
শেষ গান পাঠাব তােমা-পানে শেষ উপহারে॥