১২৪
কেন যামিনী না যেতে জাগালে না, বেলা হল মরি লাজে।
শরমে জড়িত চরণে কেমনে চলিব পথেরি মাঝে॥
আলােকপরশে মরমে মরিয়া হেরো গাে শেফালি পড়িছে ঝরিয়া,
কোনােমতে আছে পরান ধরিয়া কামিনী শিখিল সাজে॥
নিবিয়া বাঁচিল নিশার প্রদীপ উষার বাতাস লাগি,
রজনীর শশী গগনের কোণে লুকায় শরণ মাগি।
পাখি ডাকি বলে ‘গেল বিভাবরী’, বধু চলে জলে লইয়া গাগরি।
আমি এ আকুল কবরী আবরি কেমনে যাইব কাজে॥
১২৫
নিশি না পােহাতে জীবনপ্রদীপ জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া,
তােমার অনল দিয়া॥
কবে যাবে তুমি সমুখের পথে দীপ্ত শিখাটি বাহি
আছি তাই পথ চাহি।
পুড়িবে বলিয়া রয়েছে আশায় আমার নীরব হিয়া
আপন আঁধার নিয়া॥
১২৬
অলকে কুসুম না দিয়ো, শুধু শিথিল কবরী বাঁধিয়াে।
কাজলবিহীন সজল নয়নে হৃদয়দুয়ারে ঘা দিয়াে॥
আকুল আঁচলে পথিকচরণে মরণের ফাঁদ ফাঁদিয়াে—
না করিয়া বাদ মনে যাহা সাধ, নিদয়া, নীরবে সাধিয়াে॥
এসো এসাে বিনা ভূষণেই, দোষ নেই তাহে দোষ নেই।
যে আসে আসুক ওই তব রূপ অযতন-ছাঁদে ছাঁদিয়াে।
শুধু হাসিখানি আঁখিকোণে হানি উতলা হৃদয় ধাঁদিয়ো॥
১২৭
নিশীথে কী কয়ে গেল মনে কী জানি, কী জানি।
সে কি ঘুমে, সে কি জাগরণে কী জানি, কী জানি॥