১৩৩
এই বুঝি মাের ভােরের তারা এল সাঁঝের তারার বেশে।
অবাক-চোখে ওই চেয়ে রয় চিরদিনের হাসি হেসে॥
সকল বেলা পাই নি দেখা, পাড়ি দিল কখন একা,
নামল আলােক-সাগর-পারে অন্ধকারের ঘাটে এসে॥
সকাল বেলা আমার হৃদয় ভরিয়েছিল পথের গানে,
সন্ধ্যাবেলা বাজায় বীণা কোন্ সুরে যে কেই বা জানে।
পরিচয়ের রসের ধারা কিছুতে আর হয় না হারা,
বারে বারে নতুন করে চিত্ত আমার ভুলাবে সে॥
১৩৪
আমার দোসর যে জন ওগাে তারে কে জানে।
একতারা তার দেয় কি সাড়া আমার গানে কে জানে।
আমার নদীর যে ঢেউ ওগাে জানে কি কেউ
যায় বহে যায় কাহার পানে। কে জানে॥
যখন বকুল ঝ’রে
আমার কাননতল যায় গাে ভ’রে
তখন কে আসে-যায় সেই বনছায়ায়,
কে সাজি তার ভরে আনে। কে জানে॥
১৩৫
আমার লতার প্রথম মুকুল চেয়ে আছে মোর পানে,
শুধায় আমারে ‘এসেছি এ কোনখানে’॥
এসেছ আমার জীবনলীলার রঙ্গে,
এসেছ আমার তরল ভাবের ভঙ্গে,
এসেছ আমার স্বরতরঙ্গ-গানে॥
আমার লতার প্রথম মুকুল প্রভাত-আলোক-মাঝে
শুধায় আমারে ‘এসেছি এ কোন্ কাজে’।