১৬৫
ওকে বাঁধিবি কে রে, হবে যে ছেড়ে দিতে।
ওয় পথ খোলে রে বিদায়রজনীতে।
গগনে তার মেঘদুয়ার কেঁপে বুকেরই ধন বুকেতে ছিল চেপে,
প্রভাতবায়ে গেল সে দ্বার কেঁপে—
এল যে ডাক ভোরের রাগিণীতে।
শীতল হোক বিমল হোক প্রাণ,
হৃদয়ে শোক রাখুক তার দান।
যা ছিল ঘিরে শূন্যে সে মিলালো, সে ফাঁক দিয়ে আসুক তবে আলো—
বিজনে বসি পূজাঞ্জলি ঢালো
শিশিরে-ভরা সেঁউতি-ঝরা গীতে।
১৬৬
সকালবেলার আলোয় বাজে বিদায়ব্যথার ভৈরবী—
আন্ বাঁশি তোর, আয় কবি।
শিশিরশিহর শরতপ্রাতে শিউলিফুলের গন্ধসাথে
গান রেখে যাস অকুল হাওয়ায়, নাই যদি বোস নাই র’বি।
এমন উষা আসবে আবার সোনায় রঙিন দিগন্তে,
কুন্দের দুল সীমন্তে।
কপোতকূজনকরুণ ছায়ায় শ্যামল কোমল মধুর মায়ায়
তোমার গানের নূপুরমুখর
জাগবে আবার এই ছবি।
১৬৭
শেষ বেলাকার শেষের গানে
ভোরের বেলার বেদন আনে।
তরুণ মুখের করুণ হাসি গোধূলি-আলোয় উঠেছে ভাসি,
প্রথম ব্যথার প্রথম বাঁশি
বাজে দিগন্তে কী সন্ধানে শেষের গানে।