আজি দিনান্তে মেঘের মায়া
সে আঁখিপাতায় ফেলেছে ছায়া।
খেলায় খেলায় যে কথাখানি
চোখে চোখে যত বিজলি হানি
সেই প্রভাতের নবীন বাণী
চলেছে রাতের স্বপন-পানে শেষের গানে।
১৬৮
কাঁদার সময় অল্প ওরে, ভোলার সময় বড়ো।
যাবার দিনে শুকনো বকুল মিথ্যে করিস জড়ো।
আগমনীর নাচের তালে নতুন মুকুল নামল ভালে,
নিঠুর হাওয়ায় পুরানো ফুল ওই-যে পড়ো-পড়ো।
ছিন্নবাঁধন পান্থরা যায় ছায়ার পানে চলে,
কান্না তাদের রইল পড়ে শীর্ণ তৃণের কোলে।
জীর্ণ পাতা উড়িয়ে ফেলা খেল্, কবি, সেই শিশুর খেলা—
নতুন গানে কাঁচা সুরের প্রাণের বেদী গড়ো।
১৬৯
কেন রে এতই যাবার ত্বরা—
বসন্ত, তোর হয়েছে কি ভোর গানের ভরা।
এখনি মাধবী ফুরালো কি সবই,
বনছায়া গায় শেষ ভৈরবী—
নিল কি বিদায় শিথিল করবী বৃন্তঝরা।
এখনি তোমার পীত উত্তরী দিবে কি ফেলে
তপ্ত দিনের শুষ্ক তৃণের আসন মেলে।
বিদায়ের পথে হতাশ বকুল,
কপোতকূজনে হল যে আকুল,
চরণপূজনে ঝরাইছে ফুল বসুন্ধরা।