১৭৮
জানি তুমি ফিরে আসিবে আবার, জানি।
তবু মনে মনে প্রবোধ নাহি যে মানি।
বিদায়লগনে ধরিয়া দুয়ার তাই তো তোমায় বলি বারবার
‘ফিরে এসো এসো বন্ধু আমার’, বাষ্পবিভল বাণী।
যাবার বেলায় কিছু মোরে দিয়ো দিয়ো
গানের সুরেতে তব আশ্বাস প্রিয়।
বনপথে যবে যাবে সে ক্ষণের হয়তো বা কিছু রবে স্মরণের,
তুলি লব সেই তব চরণের দলিত কুসুমখানি।
১৭৯
না রে, না রে, ভয় করব না বিদায়বেদনারে।
আপন সুধা দিয়ে ভরে দেব তারে।
চোখের জলে সে যে নবীন রবে, ধ্যানের মণিমালায় গাঁথা হবে,
পরব বুকের হারে।
নয়ন হতে তুমি আসবে প্রাণে, মিলবে তোমার বাণী আমার গানে গানে।
বিরহব্যথায় বিধুর দিনে দুখের আলোয় তোমায় নেব চিনে
এ মোর সাধনারে।
১৮০
তোর প্রাণের রস তো শুকিয়ে গেল ওরে।
তবে মরণরসে নে পেয়ালা ভরে।
সে যে চিতার আগুন গালিয়ে ঢালা, সব জ্বলনের মেটায় জ্বালা—
সব শূন্যকে সে অট্টহেসে দেয় যে রঙিন করে।
তোর সূর্য ছিল গহন মেঘের মাঝে,
তোর দিন মরেছে অকাজেরই কাজে।
তবে আসুক-না সেই তিমিররাতি লুপ্তিনেশার চরম সাথি—
তোর ক্লান্ত আঁখি দিক সে ঢাকি দিক্-ভোলাবার ঘোরে।