সে-যে চমকে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়, যায় না তারে বাঁধা।
সে-যে নাগাল পেলে পালায় ঠেলে, লাগায় চোখে ধাঁদা।
আমি ছুটব পিছে মিছে মিছে পাই বা নাহি পাই—
আমি আপন-মনে মাঠে বনে উধাও হয়ে ধাই।
তোরা পাবার জিনিস হাটে কিনিস, রাখিস ঘরে ভরে—
যারে যায় না পাওয়া তারি হাওয়া লাগল কেন মোরে।
আমার যা ছিল তা গেল ঘুচে যা নেই তার ঝোঁকে—
আমার ফুরোয় পুঁজি, ভাবিস বুঝি মরি তারি শোকে?
আমি আছি সুখে হাস্যমুখে, দুঃখ আমার নাই।
আমি আপন-মনে মাঠে বনে উধাও হয়ে ধাই।
১৮৫
ও আমার ধ্যানেরই ধন,
তোমায় হৃদয়ে দোলায় যে হাসি রোদন।
আসে বসন্ত, ফোটে বকুল, কুঞ্জে পূর্ণিমাচাঁদ হেসে আকুল—
তারা তোমায় খুঁজে না পায়,
প্রাণের মাঝে আছ গোপন স্বপন।
আঁখিরে ফাঁকি দাও, একি ধারা!
অশ্রুজলে তারে কর সারা।
গন্ধ আসে, কেন দেখি নে মালা। পায়ের ধ্বনি শুনি, পথ নিরালা।
বেলা যে যায়, ফুল যে শুকায়—
অনাথ হয়ে আছে আমার ভুবন।
১৮৬
হায় রে, ওরে যায় না কি জানা।
নয়ন ওরে খুঁজে বেড়ায়, পায় না ঠিকানা।
অলখ পথেই যাওয়া আসা, শুনি চরণধ্বনির ভাষা—
গন্ধে শুধু হাওয়ায় হাওয়ায় রইল নিশানা।