কেমন করে জানাই তারে
বসে আছি পথের ধারে।
প্রাণে এল সন্ধ্যাবেলা আলোয় ছায়ায় রঙিন খেলা—
ঝরে-পড়া বকুলদলে বিছায় বিছানা।
১৮৭
ওহে সুন্দর, মম গৃহে আজি পরমোৎসব-রাতি।
রেখেছি কনকমন্দিরে কমলাসন পাতি।
তুমি এসো হৃদে এসো, হৃদিবল্লভ হৃদয়েশ,
মম অশ্রুনেত্রে কর’ বরিষন করুণ হাস্যভাতি।
তব কণ্ঠে দিব মালা, দিব চরণে ফুলভালা—
আমি সকল কুঞ্জকানন ফিরি এনেছি যূথী জাতি।
তব পদতললীনা আমি বাজাব স্বর্ণবীণা—
বরণ করিয়া সব তোমারে মম মানসসাথি।
১৮৮
কে আমারে যেন এনেছে ডাকিয়া, এসেছি ভুলে।
তবু একবার চাও মুখপানে নয়ন তুলে।
দেখি ও নয়নে নিমেষের তরে সে দিনের ছায়া পড়ে কি না পড়ে,
সজল আবেগে আঁখিপাতা-দুটি পড়ে কি ঢুলে।
ক্ষণেকের তরে ভুল ভাঙায়ো না, এসেছি ভুলে।
ব্যথা দিয়ে কবে কথা কয়েছিলে পড়ে না মনে,
দূরে থেকে কবে ফিরে গিয়েছিলে নাই স্মরণে।
শুধু মনে পড়ে হাসিমুখখানি, লাজে বাধো-বাধো সোহাগের বাণী,
মনে পড়ে সেই হৃদয় উছাস নয়নকূলে।
তুমি যে ভুলেছ ভুলে গেছি, তাই এসেছি ভুলে।
কাননের ফুল এরা তো ভোলে নি, আমরা ভুলি।
এই তো ফুটেছে পাতায় পাতায় কামিনীগুলি।