১৯৩
মনে রয়ে গেল মনের কথা—
শুধু চোখের জল, প্রাণের ব্যথা।
মনে করি দুটি কথা ব’লে যাই, কেন মুখের পানে চেয়ে চলে যাই।
সে যদি চাহে মরি যে তাহে, কেন মুদে আসে আঁখির পাতা।
ম্লানমুখে, সখী, সে যে চলে যায়—ও তারে ফিরায়ে ডেকে নিয়ে আয়
বুঝিল না সে যে কেঁদে গেল— ধুলায় লুটাইল হৃদয়লতা।
১৯৪
ওগো আমার চির-অচেনা পরদেশী,
ক্ষণতরে এসেছিলে নির্জন নিকুঞ্জ হতে কিসের আহ্বানে।
যে কথা বলেছিলে ভাষা বুঝি নাই তার,
আভাস তারি হৃদয়ে বাজিছে সদা
যেন কাহার বাঁশির মনোমোহন সুরে।
প্রভাতে একা বসে গেঁথেছিনু মালা,
ছিল পড়ে তৃণতলে অশোকবনে।
দিনশেষে ফিরে এসে পাই নি তারে,
তুমিও কোথা গেছ চলে—
বেলা গেল, হল না আর দেখা।
১৯৫
কোথা হতে শুনতে যেন পাই—
আকাশে আকাশে বলে ‘যাই’।
পাতায় পাতায় ঘাসে ঘাসে জেগে ওঠে দীর্ঘশ্বাসে
‘হায়, তারা নাই, তারা নাই’।
কত দিনের কত ব্যথা হাওয়ায় ছড়ায় ব্যাকুলতা।
চলে যাওয়ার পথ যে দিকে সে দিক-পানে অনিমিখে
আজ ফিরে চাই, ফিরে চাই।