১৯৬
পান্থপাখির রিক্ত কূলায় বনের গোপন ডালে
কান পেতে ওই তাকিয়ে আছে পাতার অন্তরালে।
বাসায়-ফেরা ডানার শব্দ নিঃশেষে সব হল স্তব্ধ,
সন্ধ্যাতারার জাগল মন্ত্র দিনের বিদায়-কালে।
চন্দ্র দিল বোমাঞ্চিয়া তরঙ্গ সিন্ধুর,
বনচ্ছায়ার রন্ধ্রে রন্ধ্রে লাগল আলোর সুর।
সুপ্তিবিহীন শূন্যতা যে সারা প্রহর বক্ষে বাজে
রাতের হাওয়ায় মর্মরিত বেণুশাখার ভালে।
১৯৭
বাজে করুণ সুরে হায় দূরে
তব চরণতলচুম্বিত পন্থবীণা।
এ মম পান্থচিত চঞ্চল
জানি না কী উদ্দেশে।
যুথীগন্ধ অশান্ত সমীরে
ধায় উতলা উচ্ছ্বাসে,
তেমনি চিত্ত উদাসী রে
নিদারুণ বিচ্ছেদের নিশীথে।
১৯৮
জীবনে পরম লগন কোরো না হেলা
কোরো না হেলা হে গরবিনি।
বৃথাই কাটিবে বেলা, সাঙ্গ হবে যে খেলা,
সুধার হাটে ফুরাবে বিকিকিনি হে গরবিনি।
মনের মানুষ লুকিয়ে আসে, দাঁড়ায় পাশে, হায়
হেসে চলে যায় জোয়ার-জলে ভাসিয়ে ভেলা—
দুর্লভ ধনে দুঃখের পণে লও গো জিনি হে গরবিনি।