অধীর সমীর পূরবৈয়াঁ নিবিড় বিরহব্যথা বইয়া
নিস ফেলে মূহু মূহু হায়।
আষাঢ় সজলঘন আঁধারে ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে—
‘আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে
ঋতুর দু ধারে থাকে দুজনে, মেলে না যে কাকলি ও কূজনে,
আকাশের প্রাণ করে হূহু হায়।
২৫১
রোদনভরা এ বসন্ত সখী, কখনো আসে নি বুঝি আগে।
মোর বিরহবেদনা রাঙালো কিংশুকরক্তিমরাগে।
কুঞ্জদ্বারে বনমল্লিকা সেজেছে পরিয়া নব পত্রালিকা,
সারা দিন-রজনী অনিমিখা কার পথ চেয়ে জাগে।
দক্ষিণসমীরে দূর গগনে একেলা বিরহী গাহে বুঝি গো।
কুঞ্জবনে মোর মুকুল যত আবরণবন্ধন ছিঁড়িতে চাহে।
আমি এ প্রাণের রুদ্ধ দ্বারে ব্যাকুল কর হানি বারে বারে—
দেওয়া হল না যে আপনারে এই ব্যথা মনে লাগে।
২৫২
এসো এসো ফিরে এসো, বঁধু হে ফিরে এসো।
আমার ক্ষুধিত তৃষিত তাপিত চিত, নাথ হে, ফিরে এসো।
ওহে নিষ্ঠুর, ফিরে এসো,
আমার করুণকোমল এসো,
আমার সজলজলদস্নিগ্ধকান্ত সুন্দর ফিরে এসো,
আমার নিতিসুখ ফিরে এসো,
আমার চিরদুখ ফিরে এসো।
আমার সবসুখদুখমন্থনধন অন্তরে ফিরে এসো।