২৬০
দিনের পর দিন যে গেল আঁধার ঘরে,
তোমার আসনখানি দেখে মন যে কেমন করে।
ওগো বঁধু, ফুলের সাজি মঞ্জরীতে ভরল আজি—
ব্যথার হারে গাঁথব তারে, রাখব চরণ-’পরে।
পায়ের ধ্বনি গণি গণি রাতের তারা জাগে,
উত্তরীয়ের হাওয়া এসে ফুলের বনে লাগে।
ফাগুনবেলার বুকের মাঝে পথ-চাওয়া সুর কেঁদে বাজে—
প্রাণের কথা ভাষা হারায়, চোখের জলে ঝরে।
২৬১
না চাহিলে যারে পাওয়া যায়, তেয়াগিলে আসে হাতে,
দিবসে সে ধন হারায়েছি আমি— পেয়েছি আঁধার রাতে।
না দেখিবে তারে, পরশিবে না গো, তারি পানে প্রাণ মেলে দিয়ে জাগো-
তারায় তারায় রবে তারি বাণী, কুসুমে ফুটিবে প্রাতে।
তারি লাগি যত ফেলেছি অশ্রুজল
বীণাবাদিনীর শতদলদলে করিছে সে টলোমল।
মোর গানে গানে পলকে পলকে ঝলসি উঠিছে ঝলকে ঝলকে,
শান্ত হাসির করুণ আলোকে ভাতিছে নয়নপাতে।
২৬২
বিরহ মধুর হল আজি মধুরাতে।
গভীর রাগিণী উঠে বাজি বেদনাতে।
ভরি দিয়া পূর্ণিমানিশা অধীর অদৰ্শনতৃষা
কী করুণ মরীচিকা আনে আঁখিপাতে।
সুদূরের সুগন্ধধারা বায়ুভরে
পরানে আমার পথহাৱা ঘুরে মরে।
কার বাণী কোন্ সুরে তালে মর্মরে পল্লবজালে,
বাজে মম মঞ্জীররাজি সাথে সাথে।