২৬৩
ফিরে ফিরে ডাক্ দেখি রে পরান খুলে, ডাক্ ডাক্ ডাক্ ফিরে ফিরে।
দেখব কেমন রয় সে ভুলে।
সে ডাক বেড়াক বনে বনে, সে ডাক শুধাক জনে জনে,
সে ডাক বুকে দুঃখে সুখে ফিরুক দুলে।
সাঁজ-সকালে রাত্রিবেলায় ক্ষণে ক্ষণে
একলা বসে ডাক্ দেখি তায় মনে মনে।
নয়ন তোরই ডাকুক তারে, শ্রবণ রহুক পথের ধারে,
থাক্-না সে ডাক গলায় গাঁথা মালার ফুলে।
২৬৪
প্রভাত-আলোরে মোর কাঁদায়ে গেলে
মিলনমালার ডোর ছিঁড়িয়া ফেলে।
পড়ে যা রহিল পিছে সব হয়ে গেল মিছে,
বসে আছি দূর-পানে নয়ন মেলে।
একে একে ধূলি হতে কুড়ায়ে মরি
যে ফুল বিদায়পথে পড়িছে ঝরি।
ভাবি নি রবে না লেশ সে দিনের অবশেষ—
কাটিল ফাগুনবেলা কী খেলা খেলে।
২৬৫
নাই যদি বা এলে তুমি এড়িয়ে যাবে তাই ব’লে?
অন্তরেতে নাই কি তুমি সামনে আমার নাই র’লে।
মন যে আছে তোমায় মিশে, আমায় তবে ছাড়বে কিসে—
প্রেম কি আমার হারায় দিশে অভিমানে যাই ব’লে।
বিরহ মোর হোক-না অকূল, সেই বিরহের সরোবরে
মিলনকমল উঠছে দুলে অশ্রুজলের ঢেউয়ের ’পরে।
তবু তৃষায় মরে আঁখি, তোমার লাগি চেয়ে থাকি—
চোখের ’পরে পাব না কি বুকের ’পরে পাই ব’লে।