চৈত্ররজনী আজ বসে আছি একা, পুন বুঝি দিল দেখা—
বনে বনে তব লেখনীলীলার রেখা,
নবকিশলয়ে গো কোন্ ভুলে এল তুলি তোমার পুরানো আখরগুলি।
মল্লিকা আজি কাননে কাননে কত
সৌরভে-ভরা তোমারি নামের মতো।
কোমল তোমার অঙ্গুলি-ছোঁওয়া বাণী মনে দিল আজি আনি
বিরহের কোন্ ব্যথাভরা লিপিখানি।
মাধবীশখায় উঠিতেছে দুলি দুলি তোমার পুরানো আখরগুলি।
২৮০
আজি সাঁঝের যমুনায় গো
তরুণ চাঁদের কিরণতরী কোথায় ভেসে যায় গো।
তারি সুদূর সারিগানে বিদায়স্মৃতি জাগায় প্রাণে
সেই-যে দুটি উতল আঁখি উছল করুণায় গো।
আজ মনে মোর যে সুর বাজে কেউ তা শোনে নাই কি।
একলা প্রাণের কথা নিয়ে একলা এ দিন যায় কি।
যায় যাবে, সে ফিরে ফিরে লুকিয়ে তুলে নেয় নি কি রে
আমার পরম বেদনখানি আপন বেদনায় গো।
২৮১
সখী, আঁধারে একেলা ঘরে মন মানে না।
কিসেরই পিয়াসে কোথা যে যাবে সে, পথ জানে না।
ঝরোঝরো নীরে, নিবিড় তিমিরে, সজল শরীরে গো
যেন কার বাণী কভু কানে আনে— কভু আনে না।
২৮২
যখন ভাঙল মিলনমেলা
ভেবেছিলেম ভুলব না আর চক্ষের জল ফেলা।
দিনে দিনে পথের ধুলায় মালা হতে ফুল ঝরে যায়—
জানি নে তো কখন এল বিস্মরণের বেলা।