দিনে দিনে কঠিন হল কখন বুকের তল—
ভেবেছিলেম ঝরবে না আর আমার চোখের জল।
হঠাৎ দেখা পথের মাঝে, কান্না তখন থামে না যে—
ভোলার তলে তলে ছিল অশ্রুজলের খেলা।
২৮৩
আমার এ পথ তোমার পথের থেকে অনেক দূরে গেছে বেঁকে।
আমার ফুলে আর কি কবে তোমার মালা গাঁথা হবে,
তোমার বাঁশি দূরের হাওয়ায় কেঁদে বাজে কারে ডেকে।
শ্রান্তি লাগে পায়ে পায়ে বসি পথের তরুছায়ে।
সাথিহারার গোপন ব্যথা বলব যারে সেজন কোথা—
পথিকরা যায় আপন-মনে, আমারে যায় পিছে রেখে।
২৮৪
একলা ব’সে একে একে অন্যমনে পদ্মের দল ভাসাও জলে অকারণে।
হায় রে, বুঝি কখন তুমি গেছ ভুলে ও যে আমি এনেছিলেম আপনি তুলে,
রেখেছিলেম প্রভাতে ওই চরণমূলে অকারণে—
কথন তুলে নিলে হাতে যাবার ক্ষণে অন্যমনে।
দিনের পরে দিনগুলি মোর এমনি ভাবে
তোমার হাতে ছিঁড়ে ছিঁড়ে হারিয়ে যাবে।
সবগুলি এই শেষ হবে যেই তোমার খেলায়
এমনি তোমার আলস-ভরা অবহেলায়
হয়তো তখন বাজবে ব্যথা সন্ধেবেলায় অকারণে—
চোখের জলের লাগবে আভাস নয়নকোণে অন্যমনে।
২৮৫
তার বিদায়বেলার মালাখানি আমার গলে রে
দোলে দোলে বুকের কাছে পলে পলে রে।
গন্ধ তাহার ক্ষণে ক্ষণে জাগে ফাগুনসমীরণে
গুঞ্জরিত কুঞ্জতলে রে।