নদীর জলে থাকি রে কান পেতে,
কাঁপে রে প্রাণ পাতার মর্মরেতে।
মনে হয় যে পাব খুঁজি ফুলের ভাষা যদি বুঝি
যে পথ গেছে সন্ধ্যাতারার পারে মন, মন রে আমার।
৩০৮
যে দিন সকল মুকুল গেল ঝরে
আমায় ডাকলে কেন গো, এমন করে।
যেতে হবে যে পথ বেয়ে শুকনো পাতা আছে ছেয়ে,
হাতে আমার শূন্য ডালা কী ফুল দিয়ে দেবো ভরে।
গানহারা মোর হৃদয়তলে
তোমার ব্যাকুল বাঁশি কী যে বলে।
নেই আয়োজন, নেই মম ধন, নেই আভরণ, নেই আবরণ—
রিক্ত বাহু এই তো আমার বাঁধবে তোমায় বাহুডোরে।
৩০৯
আমায় থাকতে দে-না আপন-মনে।
সেই চরণের পরশখানি মনে পড়ে ক্ষণে ক্ষণে।
কথার পাকে কাজের ঘোরে ভুলিয়ে রাখে কে আর মোরে,
তার স্মরণের বরণমালা গাঁথি বসে গোপন কোণে।
এই-যে ব্যথার রতনখানি আমার বুকে দিল আনি
এই নিয়ে আজ দিনের শেষে একা চলি তার উদ্দেশে।
নয়নজলে সামনে দাঁড়াই, তারে সাজাই তারি ধনে।
৩১০
হে বিরহী, হায়, চঞ্চল হিয়া তব,
নীরবে জাগ একাকী শূন্যমন্দিরে দীর্ঘ বিভাবরী—
কোন্ সে নিরুদ্দেশ-লাগি আছ জাগিয়া।