স্বপনরূপিণী অলোকসুন্দরী অলক্ষ্য অলকাপুরী-নিবাসিনী,
তাহার মুরতি রচিলে বেদনায় হৃদয়মাঝারে।
৩১১
ওগো সখী, দেখি দেখি, মন কোথা আছে।
কত কাতর হৃদয় ঘুরে ঘুরে হেরো কারে যাচে।
কী মধু, কী সুধা, কী সৌরভ, কী রূপ রেখেছ লুকায়ে—
কোন্ প্রভাতে, ও কোন্ রবির আলোকে দিবে খুলিয়ে কাহার কাছে।
সে যদি না আসে এ জীবনে, এ কাননে পথ না পায়!
যারা এসেছে তারা বসন্ত ফুরালে নিরাশপ্রাণে ফেরে পাছে।
৩১২
সখী, বহে গেল বেলা, শুধু হাসিখেলা এ কি আর ভালো লাগে।
আকুল তিয়াষ, প্রেমের পিয়াস, প্রাণে কেন নাহি জাগে।
কবে আর হবে থাকিতে জীবন আঁখিতে আঁখিতে মদির মিলন—
মধুর হুতাশে মধুর দহন নিতি-নব অনুরাগে।
তরল কোমল নয়নের জল, নয়নে উঠিবে ভাসি,
সে বিষাদনীরে নিবে যাবে ধীরে প্রখর চপল হাসি।
উদাস নিশ্বাস আকুলি উঠিবে, আশানিরাশায় পরান টুটিবে—
মরমের আলো কপোলে ফুটিবে শরম-অরুণরাগে।
৩১৩
ওলো রেখে দে সখী রেখে দে, মিছে কথা ভালোবাসা।
সুখের বেদনা, সোহাগযাতনা, বুঝিতে পারি না ভাষা।
ফুলের বাঁধন, সাধের কাঁদন, পরান সঁপিতে প্রাণের সাধন,
লহো-লহো ব’লে পরে আরাধন— পরের চরণে আশা।
তিলেক দরশ পরশ মাগিয়া বরষ বরষ কাতরে জাগিয়া
পরের মুখের হাসির লাগিয়া অশ্রুসাগরে ভাসা—
জীবনের সুখ খুঁজিবারে গিয়া জীবনের সুখ নাশা।