৩১৪
তারে দেখাতে পারি নে কেন প্রাণ খুলে গো।
বুঝাতে পারি নে হৃদয়বেদনা।
কেমনে সে হেসে চলে যায়, কোন্ প্রাণে ফিরেও না চায়—
এত সাধ এত প্রেম করে অপমান।
এত ব্যথাভরা ভালোবাসা কেহ দেখে না, প্রাণে গোপনে রহিল।
এ প্রেম কুসুম যদি হ’ত প্রাণ হতে ছিঁড়ে লইতাম,
তার চরণে করিতাম দান।
বুঝি সে তুলে নিত না, শুকাতো অনাদরে, তবু তার সংশয় হ’ত অবসান।
৩১৫
এ তো খেলা নয়, খেলা নয়— এ যে হৃদয়দহনজ্বালা সখী।
এ যে প্রাণভরা ব্যাকুলতা, গোপন মর্মের ব্যথা,
এ যে কাহার চরণোদ্দেশে জীবন মরণ ঢালা।
কে যেন সতত মোরে ডাকিয়ে আকুল করে—
যাই-যাই করে প্রাণ, যেতে পারি নে।
যে কথা বলিতে চাহি তা বুঝি বলিতে নাহি—
কোথায় নামায়ে রাখি, সখী, এ প্রেমের ডালা।
যতনে গাঁথিয়ে শেষে পরাতে পারি নে মালা।
৩১৬
দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি।
তাই চমকিত মন, চকিত শ্রবণ, তৃষিত আকুল আঁখি।
চঞ্চল হয়ে ঘুরিয়ে বেড়াই, সদা মনে হয় যদি দেখা পাই—
‘কে আসিছে’ বলে চমকিয়ে চাই কাননে ডাকিলে পাখি।
জাগরণে তারে না দেখিতে পাই, থাকি স্বপনের আশে—
ঘুমের আড়ালে যদি ধরা দেয় বাঁধিব স্বপনপাশে।
এত ভালোবাসি, এত যারে চাই, মনে হয় না তো সে যে কাছে নাই—
যেন এ বাসনা ব্যাকুল আবেগে তাহারে আনিবে ডাকি।