৩১৭
অলি বার বার ফিরে যায়, অলি বার বার ফিরে আসে—
তবে তো ফুল বিকাশে।
কলি ফুটিতে চাহে, ফোটে না, মরে লাজে, মরে ত্রাসে।
ভুলি মান অপমান ও মন প্রাণ, নিশিদিন রহো পাশে।
ওগো, আশা ছেড়ে তবু আশা রেখে দাও হৃদয়রতন-আশে।
ফিরে এসো, ফিরে এসো— বন মোদিত ফুলবাসে।
আজি বিরহরজনী, ফুল্ল কুসুম শিশিরসলিলে ভাসে।
৩১৮
দূরের বন্ধু সুরের দূতীরে পাঠালো তোমার ঘরে।
মিলনবীণা যে হৃদয়ের মাঝে বাজে তব অগোচরে।
মনের কথাটি গোপনে গোপনে বাতাসে বাতাসে ভেসে আসে মনে,
বনে উপবনে, বকুলশাখার চঞ্চলতায় মর্মরে মর্মরে।
পুষ্পমালার পরশপুলক পেয়েছ বক্ষতলে,
রাখো তুমি তারে সিক্ত করিয়া সুখের অশ্রুজলে।
ধরো সাহানাতে মিলনের পালা, সাজাও যতনে বরণের ডালা—
মালতীর মালা, অঞ্চলে ঢেকে কনকপ্রদীপ আনো আনো তার পথ-’পরে।
৩১৯
আমার মন চেয়ে রয় মনে মনে হেরে মাধুরী।
নয়ন আমার কাঙাল হয়ে মরে না ঘুরি।
চেয়ে চেয়ে বুকের মাঝে গুঞ্জরিল একতারা যে—
মনোরথের পথে পথে বাজল বাঁশুরি।
রূপের কোলে ওই-যে দোলে অরূপ মাধুরী।
কূলহারা কোন্ রসের সরোবরে মূলহারা ফুল ভাসে জলের ’পরে।
হাতের ধরা ধরতে গেলে ঢেউ দিয়ে তায় দিই যে ঠেলে—
আপন-মনে স্থির হয়ে রই, করি নে চুরি।
ধরা দেওয়ার ধন সে তো নয়, অরূপ মাধুরী।