৩২০
বিনা সাজে সাজি দেখা দিয়েছিলে কবে,
আভরণে আজি আবরণ কেন তবে।
ভালোবাসা যদি মেশে আধা-আধি মোহে
আলোতে আঁধারে দোঁহারে হারাব দোঁহে।
ধেয়ে আসে হিয়া তোমার সহজ রবে,
আভরণ দিয়া আবরণ কেন তবে।
ভাবের রসেতে যাহার নয়ন ডোবা
ভূষণে তাহারে দেখাও কিসের শোভা।
কাছে এসে তবু কেন রয়ে গেলে দূরে—
বাহির-বাঁধনে বাঁধিবে কী বন্ধুরে,
নিজের ধনে কি নিজে চুরি করে লবে।
আভরণে আজি আবরণ কেন তবে।
৩২১
বাহির পথে বিবাগি হিয়া কিসের খোঁজে গেলি,
আয় রে ফিরে আয়।
পুরানো ঘরে দুয়ার দিয়া ছেঁড়া আসন মেলি
বসিবি নিরালায়।
সারাটা বেলা সাগরধারে কুড়ালি যত নুড়ি,
নানা রঙের শামুক-ভারে বোঝাই হল ঝুড়ি,
লবণপারাবারের পারে প্রখর তাপে পুড়ি
মরিলি পিপাসায়—
ঢেউয়ের দোল তুলিল রোল অকূলতল জুড়ি,
কহিল বাণী কী জানি কী ভাষায়।
বিরাম হল আরামহীন যদি রে তোর ঘরে, না যদি রয় সাথি,
সন্ধ্যা যদি তন্দ্রালীন মৌন অনাদরে, না যদি জ্বালে বাতি,
তবু তো আছে আঁধার কোণে ধ্যানের ধনগুলি—
একেলা বসি আপন-মনে মুছিবি তার ধূলি,