পাতা:গীতবিতান.djvu/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০২
প্রেম

৩২৯

তোমার বৈশাখে ছিল প্রখর রৌদ্রের জ্বালা,
কখন বাদল আনে আষাঢ়ের পালা,  হায় হায় হায়।
কঠিন পাষাণে কেমনে গোপনে ছিল,
সহসা ঝরনা নামিল অশ্রুঢালা,  হায় হায় হায়।
মৃগয়া করিতে বাহির হল যে বনে
মৃগী হয়ে শেষে এল কি অবলা বালা,  হায় হায় হায়।
যে ছিল আপন শক্তির অভিমানে
কার পায়ে আনে হার মানিবার ডালা,  হায় হায় হায়


৩৩০

আমার এই  রিক্ত ডালি  দিব তোমারি পায়ে।
দিব  কাঙালিনীর আঁচল তোমার  পথে পথে বিছায়ে।
যে পুষ্পে গাঁথ পুষ্পধনু  তারি  ফুলে ফুলে, হে অতনু,
আমার  পূজানিবেদনের দৈন্য  দিয়ো ঘুচায়ে।
তোমার রণজয়ের অভিযানে  তুমি  আমায় নিয়ো,
ফুলবাণের টিকা আমার  ভালে  এঁকে দিয়ো দিয়ো।
আমার  শূন্যতা দাও যদি সুধায় ভরি  দিব তোমার জয়ধ্বনি ঘোষণ করি—
ফাল্গুনের আহ্বান  জাগাও  আমার কায়ে  দক্ষিণবায়ে।


৩৩১

‘আমার  অঙ্গে অঙ্গে কে বাজায় বাঁশি।  আনন্দে বিষাদে মন উদাসী।
পুষ্পবিকাশের সুরে  দেহ মন উঠে পূরে,
কী মাধুরীগন্ধ  বাতাসে যায় ভাসি।
সহসা মনে জাগে আশা,  মোর  আহুতি পেয়েছে অগ্নির ভাষা।
আজ মম রূপে বেশে  লিপি লিখি কার উদ্দেশে—
এল  মর্মের বন্দিনী বাণী বন্ধন নাশি।