তুমি কেন হেসে চাও, হেসে যাও হে, আমি কেন কেঁদে ফিরি—
কেন আনি কম্পিত হৃদয়খানি, কেন যাও দূরে না দেখে।
৩৬৭
এখনো তারে চোখে দেখি নি, শুধু বাঁশি শুনেছি—
মন প্রাণ যাহা ছিল দিয়ে ফেলেছি।
শুনেছি মূরতি কালো তারে না দেখা ভালো।
সখী, বলো আমি জল আনিতে যমুনায় যাব কি।
শুধু স্বপনে এসেছিল সে, নয়নকোণে হেসেছিল সে।
সে অবধি, সই, ভয়ে ভয়ে রই— আঁখি মেলিতে ভেবে সারা হই।
কাননপথে যে খুশি সে যায়, কদমতলে যে খুশি সে চায়—
সখী, বলো আমি আঁখি তুলে কারো পানে চাব কি।
৩৬৮
বঁধূ, তোমায় করব রাজা তরুতলে,
বনফুলের বিনোদমালা দেব গলে।
সিংহাসনে বসাইতে হৃদয়খানি দেব পেতে,
অভিষেক করব তোমায় আঁখিজলে।
৩৬৯
এরা পরকে আপন করে, আপনারে পর—
বাহিরে বাঁশির রবে ছেড়ে যায় ঘর।
ভালোেবসে সুখে দুখে ব্যথা সহে হাসিমুখে,
মরণেরে করে চিরজীবননির্ভর।
৩৭০
সমুখেতে বহিছে তটিনী, দুটি তারা আকাশে ফুটিয়া।
বায়ু বহে পরিমল লুটিয়া
সঁঝের অধর হতে ম্লান হাসি পড়িছে টুটিয়া।
দিবস বিদায় চাহে, যমুনা বিলাপ গাহে—
সায়াহ্নেরই রাঙা পায়ে কেঁদে কেঁদে পড়িছে লুটিয়া।