৩৭৭
দেখে যা, দেখে যা দেখে যা লো তোরা সাধের কাননে মোর
আমার সাধের কুসুম উঠেছে ফুটিয়া, মলয় বহিছে সুরভি লুটিয়া রে—
হেথায় জোছনা ফুটে, তটিনী ছুটে, প্রমোদে কানন তোর।
আয় আয় সখী, আয় লো হেথা, দুজনে কহিব মনের কথা।
তুলিব কুসুম দুজনে মিলি রে—
সুখে গাঁথিব মালা, গণিব তারা, করিব রজনী ভোর
এ কাননে বসি গাহিব গান, সুখের স্বপনে কাটাব প্রাণ,
খেলিব দুজনে মনের খেলা রে—
প্রাণে রহিবে মিশি দিবসনিশি আধো-আধো ঘুমঘোর।
৩৭৮
নিমেষের তরে শরমে বাধিল, মরমের কথা হল না।
জনমের ভয়ে তাহারি লাগিয়ে রহিল মরমবেদনা।
চোখে চোখে সদা রাখিবারে সাধ— পলক পড়িল, ঘটিল বিষাদ।
মেলিতে নয়ন মিলালো স্বপন এমনি প্রেমের ছলনা।
৩৭৯
আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শুধাইল না কেহ।
সে তো এল না যারে সঁপিলাম এই প্রাণ মন দেহ।
সে কি মোর তরে পথ চাহে, সে কি বিরহগীত গাহে।
যার বাঁশরিধ্বনি শুনিয়ে আমি ত্যজিলাম গেহ।
৩৮০
ওকে বল্, সখী, বল্—কেন মিছে করে ছল,
মিছে হাসি কেন সখী, মিছে আঁখিজল।
জানি নে প্রেমের ধারা, ভয়ে তাই হই সারা—
কে জানে কোথায় সুধা কোথা হলাহল।
কাঁদিতে জানে না এরা, কাঁদাইতে জানে কল—
মুখের বচন শুনে মিছে কী হইবে ফল।