পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২৮
প্রকৃতি

নব ইন্দুলেখা অলকে ঝলকে
অতি নির্মল হাসবিভাসবিকাশ আকাশনীলাম্বুজ-মাঝে
শ্বেত ভুজে শ্বেত বীণা বাজে—
উঠিছে আলাপ মৃদু মধুর বেহাগতানে,
চকরে উল্লসিত ফুল্লবনে ঝিল্লিরবে তন্দ্রা আনে রে।
দিকে দিকে কত বাণী, নব নব কত ভাষা, ঝরঝর রসধারা


কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন দিয়ে যাও, শেষে  দাও মুছে।
ওহে  চঞ্চল, বেলা  না যেতে খেলা  কেন তব যায় ঘুচে॥
চকিত চোখের অশ্রুসজল  বেদনায় তুমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে চল—
কোথা সে পথের শেষ  কোন্ সুদূরের দেশ
সবাই তোমায় তাই পুছে॥
ধাঁশরির ডাকে কুঁড়ি ধরে শাখে,  ফুল যবে ফোটে নাই দেখা।
তোমার লগন যায় যে কখন,  মালা গেঁথে আমি রই একা।
‘এসো এসো এসো’ আঁখি কয় কেঁদে।  তৃষিত বক্ষ বলে ‘রাখি বেঁধে’
যেতে যেতে, ওগো প্রিয়,  কিছু ফেলে রেখে দিয়ো
ধরা দিতে যদি নাই রুচে॥


একি আকুলতা ভুবনে! একি চঞ্চলতা পবন॥
একি  মধুরমদির রসরাশি  আজি  শূন্যতলে চলে ভাসি,
ঝরে  চন্দ্রকরে একি হাসি,  ফুল-  গন্ধ লুটে গগনে॥
একি  প্রাণভরা অনুরাগে  আজি  বিশ্বজগতজন জাগে,
আজি  নিখিল নীলগগনে  সুখ-  পরশ কোথা হতে লাগে
সুখে  শিহরে সকল বনরাজি,  উঠে  মোহনবাঁশরি বাজি,
হেরো  পূর্ণবিকশিত আজি  মম  অন্তর সুন্দর স্বপনে॥