পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩৪
প্রকৃতি

তোর সুরে আর তোর গানে
দিস সাড়া তুই ওর পানে।
যা নড়ে তার দিক নেড়ে,  যা যাবে তা যাক ছেড়ে,
যা ভাঙা তাই ভাঙবে রে— যা রবে তাই থাক বাকি।

১৮

প্রখর তপনতাপে  আকাশ তৃষায় কাঁপে,
বায়ু করে হাহাকার।
দীর্ঘপথের শেষে  ডাকি মন্দিরে এসে,
‘খোলো খোলো খোলো দ্বার।’
বাহির হয়েছি কবে  কার আহ্বানরবে,
এখনি মলিন হবে  প্রভাতের ফুলহার।
বুকে বাজে আশাহীনা  ক্ষীণমর্মর বীণা,
জানি না কে আছে কিনা,  সাড়া তো না পাই তার।
আজি সারা দিন ধ’রে  প্রাণে মুর ওঠে ভরে,
একেলা কেমন ক’রে  বহিব গানের ভার।

১৯

বৈশাখের এই ভোরের হাওয়া আসে মৃদুমন্দ।
আনে আমার মনের কোণে সেই চরণের ছন্দ।
স্বপ্নশেষে বাতায়নে  হঠাৎ-আসা ক্ষণে ক্ষণে
আধো-ঘুমেৱ-প্রান্ত-ছোঁওয়া বকুলমালার গন্ধ।
বৈশাখের এই ভোরের হাওয়া বহে কিসের হর্ষ,
যেন রে সেই উড়ে-পড়া এলো কেশের স্পর্শ।
চাঁপাবনের কাঁপন-ছলে  লাগে আমার বুকের তলে
আরেক দিনের প্রভাত হতে হৃদয়দোলার স্পন্দ।

২০

বৈশাখ হে, মৌনী তাপস, কোন্ অতলের বাণী
এমন  কোথায় খুঁজে পেলে।