দিগ্দিগন্ত দহি দুঃসহ তাপ বহি
তব নিশাস আমার বক্ষে রহি রহি নিশ্বসে।
সারা হয়ে এলে দিন
সন্ধ্যামেঘের মায়ার মহিমা নিঃশেষে হবে লীন।
দীপ্তি তোমার তবে শান্ত হইয়া রবে,
তারায় তারায় নীরব মন্ত্রে ভরি দিবে শূন্য সে।
২৩
মধ্যদিনের বিজন বাতায়নে
ক্লান্তি-ভরা কোন্ বেদনার মায়া স্বপ্নাভাসে ভাসে মনে-মনে।
কৈশোরে যে সলাজ কানাকানি খুঁজেছিল প্রথম প্রেমের বাণী
আজ কেন তাই তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায় মর্মরিছে গহন বনে বনে।
যে নৈরাশা গভীর অশ্রুজলে ডুবেছিল বিস্মরণের তলে
আজ কেন সেই বনযূথীর বাসে উচ্ছ্বসিল মধুর নিশ্বাসে,
সারাবেলা চাঁপার ছায়ায় ছায়ায় গুঞ্জরিয়া ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
২৪
তপস্বিনী হে ধরণী, ওই-যে তাপের বেলা আসে—
তপের আসনখানি প্রসারিল মৌন নীলাকাশে।
অন্তরে প্রাণের লীলা হোক তব অন্তঃশীলা,
যৌবনের পরিসর শীর্ণ হোক হোমাগ্নিনিশ্বাসে।
যে তব বিচিত্র তান উচ্ছ্বসি উঠিত বহু গীতে
এক হয়ে মিশে যাক মৌনমন্ত্রে ধ্যানের শান্তিতে।
সংযমে বাঁধুক লতা কুসুমিত চঞ্চলতা,
সাজুক লাবণ্যলক্ষ্মী দৈন্যের ধূসর ধুলিবাসে।
২৫
চক্ষে আমার তৃষ্ণা ওগো, তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে।