৩২
মেঘের পরে মেঘ জমেছে, আঁধার করে আসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ একা দ্বারের পাশে।
কাজের দিনে নানা কাজে থাকি নানা লোকের মাঝে,
আজ আমি যে বসে আছি তোমারি আশ্বাসে।
তুমি যদি না দেখা দাও, কর আমায় হেলা,
কেমন করে কাটে আমার এমন বাদল-বেলা।
দূরের পানে মেলে আঁখি কেবল আমি চেয়ে থাকি,
পরান আমার কেঁদে বেড়ায় দুরন্ত বাতাসে।
৩৩
আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে।
বাঁধন-হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।
একলা বসে ঘরের কোণে কী ভাবি যে আপনমনে,
সজল হাওয়া যূথীর বনে কী কথা যায় কয়ে।
হৃদয়ে আজ ঢেউ দিয়েছে, খুঁজে না পাই কূল—
সৌরভে প্রাণ কাঁদিয়ে তোলে ভিজে বনের ফুল।
আঁধার রাতে প্রহরগুলি কোন্ সুরে আজ ভরিয়ে তুলি,
কোন্ ভুলে আজ সকল ভুলি আছি আকুল হয়ে।
৩৪
আজ বারি ঝরে ঝরঝর ভরা বাদরে,
আকাশ-ভাঙা আকুল ধারা কোথাও না ধরে।
শালের বনে থেকে থেকে ঝড় দোলা দেয় হেঁকে হেঁকে,
জল ছুটে যায় এঁকে বেঁকে মাঠের ’পরে।
আজ মেঘের জটা উড়িয়ে দিয়ে নৃত্য কে করে।
ওরে বৃষ্টিতে মোর ছুটেছে মন, লুটেছে এই ঝড়ে—
বুক ছাপিয়ে তরঙ্গ মোর কাহার পায়ে পড়ে।
অন্তরে আজ কী কলরোল, দ্বারে দ্বারে ভাঙল আগল—