পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ষা
৪৪৫

পুব হতে কোন পশ্চিমেতে যায় সে উড়ে,
গুরু গুরু ভেরী কারে দেয় যে সাড়া।
নাচের নেশা লাগল তালের পাতায় পাতায়,
হাওয়ার দোলায় দোলায় শালের বনকে মাতায়।
আকাশ হতে আকাশে কার ছুটোছুটি,
বনে বনে মেঘের ছায়ায় লুটোপুটি—
ভরা নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে কে দেয় নাড়া।

৪৩

ছায়া ঘনাইছে বনে বনে,  গগনে গগনে ডাকে দেয়া।
কবে নবঘন-বরিষনে  গোপনে গোপনে এলি কেয়া।
পুরবে নীরব ইশারাতে  একদা নিদ্রাহীন রাতে
হাওয়াতে কী পথে দিলি খেয়া—
আষাঢ়ের খেয়ালের কোন্ খেয়া।
যে মধু হৃদয়ে ছিল মাখা  কাঁটাতে কী ভয়ে দিলি ঢাকা।
বুঝি এলি যার অভিসারে  মনে মনে দেখা হল তারে,
আড়ালে আড়ালে দেয়া-নেয়া—
আপনায় লুকায়ে দেয়া-নেয়া।

৪৪

এই শ্রাবণ-বেলা বাদল-ঝরা  যূথীবনের গন্ধে ভরা।
কোন্  ভোলা দিনের বিরহিণী,  যেন তারে চিনি চিনি—
ঘন বনের কোণে কোণে ফেরে ছায়ার-ঘোমটা-পরা।
কেন বিজন বাটের পানে  তাকিয়ে আছি কে তা জানে।
হঠাৎ কখন অজানা সে  আসবে আমার দ্বারের পাশে,
বাদল-সাঁঝের আঁধার-মাঝে  গান গাবে প্রাণ-পাগল-করা।

৪৫

শ্রাবণবরিষন পার হয়ে  কী বাণী আসে ওই রয়ে রয়ে।
গোপন কেতকীর পরিমলে,  সিক্ত বকুলের বনতলে,