৪৮
যেতে দাও যেতে দাও গেল যারা।
তুমি যেয়ো না, তুমি যেয়ো না,
আমার বাদলের গান হয় নি সারা।
কুটিরে কুটিরে বন্ধ দ্বার, নিভৃত রজনী অন্ধকার,
বনের অঞ্চল কাঁপে চঞ্চল—অধীর সমীর তন্দ্রাহারা।
দীপ নিবেছে নিবুক নাকো, আঁধারে তব পরশ রাখো।
বাজুক কাঁকন তোমার হাতে আমার গানের তালের সাথে,
যেমন নদীর ছলোছলে জলে ঝরে ঝরোঝরো শ্রাবণধারা।
৪৯
ভেবেছিলেম আসবে ফিরে,
তাই ফাগুনশেষে দিলেম বিদায়।
তুমি গেলে ভাসি নয়ননীরে
এখন শ্রাবণদিনে মরি দ্বিধায়।
এখন বাদল-সাঁঝের অন্ধকারে আপনি কাঁদাই আপনারে,
একা ঝরো ঝরো বারিধারে ভাবি কী ডাকে ফিরাব তোমায়।
যখন থাক আঁখির কাছে
তখন দেখি ভিতর বাহির সব ভরে আছে।
সেই ভরা দিনের ভরসাতে চাই বিরহের ভয় ঘোচাতে,
তবু তোমা-হারা বিজন রাতে
কেবল হারাই-হারাই বাজে হিয়ায়।
৫০
আজি ওই আকাশ-’পরে সুধায় ভরে আষাঢ়-মেঘের ফাঁক।
হৃদয়-মাঝে মধুর বাজে কী উৎসবের শাঁখ।
একি হাসির বাঁশির তান, একি চোখের জলের গান—
পাই নে দিশে কে জানি সে দিল আমায় ডাক।