নির্ঝরকল্লোল-কলকলে
ধরণীর আনন্দ উচ্ছলে।
শ্রাবণের বীণাপাণি মিলালো বর্ষণবাণী
কদম্বের পল্লবে পল্লবে।
৫৪
কোন্ পুরাতন প্রাণের টানে
ছুটেছে মন মাটির পানে।
চোখ ডুবে যায় নবীন ঘাসে, ভাবনা ভাসে পূব-বাতাসে—
মল্লারগান প্লাবন জাগায় মনের মধ্যে শ্রাবণ-গানে।
লাগল যে দোল বনের মাঝে
অঙ্গে সে মোর দেয় দোলা যে।
যে বাণী ওই ধানের ক্ষেতে আকুল হল অঙ্কুরেতে
আজ এই মেঘের শ্যামল মায়ায়
সেই বাণী মোর সুরে আনে।
৫৫
নীল— অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায় সম্বৃত অম্বর হে গম্ভীর!
বনলক্ষ্মীর কম্পিত কায়, চঞ্চল অন্তর—
ঝঙ্কৃত তার ঝিল্লির মঞ্জীর হে গম্ভীর।
বর্ষণগীত হল মুখরিত মেঘমন্দ্রিত ছন্দে,
কদম্ববন গভীর মগন আনন্দঘন গন্ধে—
নন্দিত তব উৎসবমন্দির হে গম্ভীর।
দহনশয়নে তপ্ত ধরণী পড়েছিল পিপাসার্তা,
পাঠালে তাহারে ইন্দ্রলোকের অমৃতবারির বার্তা।
মাটির কঠিন বাধা হল ক্ষীণ, দিকে দিকে হল দীর্ণ—
নব-অঙ্কুর-জয়পতাকায় ধরাতল সমাকীর্ণ—
ছিন্ন হয়েছে বন্ধন বন্দীর হে গম্ভীর।