৫৬
আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে
দুয়ার কাঁপে ক্ষণে ক্ষণে,
ঘরের বাঁধন যায় বুঝি আজ টুটে।
ধরিত্রী তাঁর অঙ্গনেতে নাচের তালে ওঠেন মেতে,
চঞ্চল তাঁর অঞ্চল যায় লুটে।
প্রথম যুগের বচন শুনি মনে
নবশ্যামল প্রাণের নিকেতনে।
পুব-হাওয়া ধায় আকাশতলে, তার সাথে মোর ভাবনা চলে
কালহারা কোন্ কালের পানে ছুটে।
৫৭
পথিক মেঘের দল জোটে ওই শ্রবণগগন-অঙ্গনে।
শোন্ শোন্ রে, মন রে আমার, উধাও হয়ে নিরুদ্দেশের সঙ্গ নে।
দিক্-হারানো দুঃসাহসে সকল বাঁধন পড়ুক খসে,
কিসের বাধা ঘরের কোণের শাসনসীমা-লঙ্ঘনে।
বেদনা তোর বিজুলশিখা জ্বলুক অন্তরে।
সর্বনাশের করিস সাধন বজ্রমন্তরে।
অজানাতে করবি গাহন, ঝড় সে পথের হবে বাহন—
শেষ করে দিস আপনারে তুই প্রলয় রাতের ক্রন্দনে।
৫৮
বজ্রমানিক দিয়ে গাঁথা, আষাঢ় তোমার মালা।
তোমার শ্যামল শোভার বুকে বিদ্যুতেরই জ্বালা।
তোমার মন্ত্রবলে পাষাণ গলে, ফসল ফলে—
মরু বহে আনে তোমার পায়ে ফুলের ডালা।
মরোমরো পাতায় পাতায়, ঝরোঝরো বারির রবে
গুরুগুরু মেঘের মাদল বাজে তোমার কী উৎসবে।