পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ষা
৪৫১

সবুজ  সুধার ধারায়  প্রাণ এনে দাও তপ্ত ধরায়,
বামে রাখ ভয়ঙ্করী বন্যা মরণ-ঢালা।

৫৯

ওরে  ঝড় নেমে আয়, আয় রে আমার শুকনো পাতার ডালে
এই বরষায় নবশ্যামের আগমনের কালে।
যা উদাসীন, যা প্রাণহীন, যা আনন্দহারা,
চরম রাতের অশ্রুধারায় আজ হয়ে যাক সারা—
যাবার যাহা যাক সে চলে রুদ্র নাচের তালে।
আসন আমায় পাততে হবে রিক্ত প্রাণের ঘরে,
নবীন বসন পরতে হবে সিক্ত বুকের ’পরে।
নদীর জলে বান ডেকেছে, কূল গেল তার ভেসে,
যূথীবনের গন্ধবাণী ছুটল নিরুদ্দেশে—
পরান আমার জাগল বুঝি মরণ-অন্তরালে।

৬০

এই শ্রাবণের বুকের ভিতর আগুন আছে।
সেই আগুনের  কালোরূপ যে  আমার চোখের ’পরে নাচে।
ও তার  শিখার জটা ছড়িয়ে পড়ে  দিক হতে ওই দিগন্তরে,
তার কালো আভার কাঁপন দেখো তালবনের ওই গাছে গাছে।
বাদল-হাওয়া পাগল হল সেই আগুনের হুহুঙ্কারে।
দুন্দুভি তার বাজিয়ে বেড়ায় মাঠ হতে কোন্ মাঠের পারে।
ওরে,  সেই আগুনের পুলক ফুটে  কদম্ববন রঙিয়ে উঠে,
সেই আগুনের বেগ লাগে আজ আমার গানের পাখার পাছে।

৬১

মেঘের  কোলে কোলে যায় রে চলে বকের পাঁতি।
ওরা  ঘর-ছাড়া মোর মনের কথা যায় বুঝি ওই গাঁথি গাঁথি।