সুদূরের বীণার স্বরে কে ওদের হৃদয় হরে
দুরাশায় দুঃসাহসে উদাস করে—
সে কোন্ উধাও হাওয়ার পাগলামিতে পাখা ওদের ওঠে মাতি।
ওদের ঘুম ছুটেছে, ভয় টুটেছে একেবারে,
অলক্ষ্যেতে লক্ষ ওদের— পিছন-পানে তাকায় না রে।
যে বাসা ছিল জানা সে ওদের দিল হানা,
না-জানার পথে ওদের নাই রে মানা—
ওরা দিনের শেষে দেখেছে কোন্ মনোহরণ আঁধার রাতি।
৬২
উতল-ধারা বাদল ঝরে। সকল বেলা একা ঘরে।
সজল হাওয়া বহে বেগে, পাগল নদী ওঠে জেগে,
আকাশ ঘেরে কাজল মেঘে, তমালবনে আঁধার করে।
ওগো বঁধু দিনের শেষে এলে তুমি কেমন বেশে—
আঁচল দিয়ে শুকাব জল, মুছাব পা আকুল কেশে।
নিবিড় হবে তিমির-রাতি, জ্বেলে দেব প্রেমের বাতি,
পরানখানি দেব পাতি— চরণ বেখো তাহার ’পরে।
ভুলে গিয়ে জীবন মরণ লব তোমায় ক’রে বরণ—
করিব জয় শরম-ত্রাসে, দাঁড়াব আজ তোমার পাশে—
বাঁধন বাধা যাবে জ্ব’লে, সুখ দুঃখ দেব দ’লে,
ঝড়ের রাতে তোমার সাথে বাহির হব অভয়ভরে।
উতল-ধারা বাদল ঝরে, দুয়ার খুলে এলে ঘরে।
চোখে আমার ঝলক লাগে, সকল মনে পুলক লাগে,
চাহিতে চাই মুখের বাগে— নয়ন মেলে কাঁপি ডরে।
৬৩
ওই-যে ঝড়ের মেঘের কোলে
বৃষ্টি আসে মুক্তকেশে আঁচলখানি দোলে।